হোমায়রা আক্তার নীলা’র দুটি কবিতা

হোমায়রা আক্তার নীলা’র দুটি কবিতা

কেউ কেউ বীরাঙ্গনাও হয়

তবে যা-ই বলো
ভালো কিন্তু বেসেছিলাম সত্যি
এক সত্যি, দুই সত্যি, তিন সত্যিও বলেছিলাম সেদিন
হ্যা ভালোবেসেছিলাম মন প্রাণ উজাড় করে
কোন দ্বিধা, কোন দ্বন্দ্ব রাখিনি কোথাও
মনের কোন গলিতে…

যেইনা কাছে গেছি
মনের কথা গুলো খুলে বলতে চেয়েছি
তখনি জেনে গেছি
তোমার আসল মূর্তিখানি
কি নিদারুন সত্যিমতো মুখের ছায়ায়
এক বর্বর অসভ্য ছবি !

জানতে ! ভীষণ ভেঙে পড়েছিলাম
মনে হয়েছিল পৃথিবী বুঝি আর আমার রইলোনা
পায়ের নিচের মাটিটুকুনও আমায় আশ্রয় দিবেনা
কিন্তু উপরে একজন বিধাতা ঠিকই আছেন
তিনি তো আর মানুষের মতো নির্বিকার নন !
ঠিকই জানেন মানুষের মন !
তাইতো আমি উৎরে গেছি
বেরিয়ে গেছি মায়াকান্নার শিকল ছিড়ে
অযথা বেহিসেবি অপমানের কথা ভুলে
লোকের কথা না ভেবে !!
এই পৃথিবীর স্নিগ্ধ আলো
সুনীল আকাশের মোহনীয়তা
চাঁদের রুপালি মায়া
এখনও আমায় তাই আন্দোলিত করে !!

তোমরা যারা ভেবেছিলে আমি শেষ হয়ে গেছি
কিংবা ভাবছো আমার আর উঠে দাঁড়ানো হবে না
তারা ভুল করেছো , খুব ভুল !!
সব অবহেলিত, লাঞ্ছিত মেয়েরা একই ভাবে
তাদের জীবনের ইতি টানেনা
বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়ানোর সাহস
কেউ কেউ খুঁজে পায়
কেউ কেউ বীরাঙ্গনাও হয়
তোমরা কি তাদের দেখে খুব অভ্যস্ত নও ?
তোমার কিংবা তোমাদের কি কেউ
তাদের পাশে দাঁড়াতে ইচ্ছে করে?
তাদের কে বন্ধুতার মায়ায় বাঁধতে ইচ্ছে করে ?
কখনো কি ভেবেছো তুমি কিংবা তোমরা
যেরকম স্বাভাবিক জীবন উপভোগ করতে চাও
তাদেরও ইচ্ছে জাগে সেরকম জীবনের স্বাদ পেতে
হয়তো প্রশ্ন গুলো খুব কঠিন
উত্তর খুঁজতে গিয়ে হাসফাঁস লাগছে ?
তবুও জিজ্ঞাসিলাম
কখনো যদি খুঁজে পাও
জানিও আমায়।

 

 

ইচ্ছানামা

মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে
তোর অনেক আপনার হই
আমার পরাণ বাহির কইরা
তোর পরাণে আলগোছে থুই !
জারুল ফুলের ফাঁকে ফাঁকে
খিলখিলায় যে রোদের রানী
তার থেকে একটু খুশি লইয়া
তোর কপোলে দাগ টানি !
বিকালের কাশবন হয় উতলা
উথাল পাথাল যে বাতাসে
তার জোরেতে আউলা চুলের
রাখি পরশ তোর শরীরে !
তুই যে আকাশ নীল আমার
চাঁদনী রাতের রাজা তুই
জমিনের ঘন সবুজ ঘাস
বিষন্ন সন্ধ্যায় তোরে কাছে লই !