‘মেমসাহেব’-এর জনক নিমাই ভট্টাচার্য এখন অন্যলোকে

।।সাহিত্যপ্রতিবেদক।।

পাঠিকা-পাঠক, লেখকদের অতিপরিচিত উপন্যাসের নাম ‘মেমসাহেব’। নাড়া ও সাড়া জাগানো সেই উপন্যাসের স্রষ্টা কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক নিমাই ভট্টাচার্য শরীরত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) সকালে টালিগঞ্জের বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। বেশ কয়েক বছর ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন নিমাই ভট্টাচার্য।

নিমাই ভট্টাচার্যের জন্ম ১৯৩১ সালের ১০ এপ্রিল। যশোর জেলায় জন্ম হয় তার। মাত্র তিন বছর বয়সে মাকে হারান তিনি। বাবা সুরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যই তাকে মানুষ করেন। ১৯৪৮ সালে ম্যাট্রিক পাশ করে কলকাতার রিপন কলেজে ভর্তি হন। কলেজে পড়তেই সাংবাদিকতা শুরু করেন তিনি। তবে তার সাহিত্যগুলির আড়ালে ঢাকা পড়ে গিয়েছে দীর্ঘ সাংবাদিক জীবন। মেমসাহেব তার অন্যতম সৃষ্টি তা ছাড়াও পিয়াসা, ম্যারেজ রেজিস্ট্রার, অষ্টাদশী, ডিপ্লোম্যাট, নাচনী, ইমন কল্যাণ, ব্যাচেলারের মতো অসংখ্য উপন্যাস লিখেছিলেন তিনি।
কলেজ পড়তেই সাংবাদিকতা শুরু করেছিলেন তিনি। ১৯৫০ সালে ‘লোকসেবক’ পত্রিকা দিয়ে সাংবাদিকতা জীবনের শুরু তাঁর। তারপর দিল্লিতে গিয়ে বেশ কয়েকটি কাগজের সংসদ, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক করেসপন্ডেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন।
১৯৫০ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ৩০ বছরের সাংবাদিকতা জীবনের বড় সময়টা কাটিয়েছেন দিল্লিতে। কাজ করেছেন পাঁচটি কাগজে। অধিকাংশই সর্বভারতীয় সংবাদপত্র।
দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে জওহরলাল নেহরু, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, ভি কে কৃষ্ণমেনন, মোরারজী দেশাই, ইন্দিরা গান্ধী-সহ অনেকের স্নেহভাজন ছিলেন তিনি। জোট নিরপেক্ষ শীর্ষ সম্মেলন, কমনওয়েলথ সম্মেলনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী-সহ বিখ্যাত নেতৃবৃন্দের সফরেসঙ্গী হওয়ার অভিজ্ঞতা ছিল তার।
সাংবাদিকতা থেকে অবসর নেওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পত্রিকায় কলম লিখতেন তিনি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিষয়েও অগাত পাণ্ডিত্য ছিল নিমাই ভট্টাচার্যের।