বেনজীন খান

গঙ্গারিডির এক প্রাচীন নগরের নাম মুড়লী

যশোর বাংলার একটি প্রাচীন রাজ্য বা জনপদের নাম।একথা আজ কে না জানে। এমনকি এও জানে যশোর নামকরণ কবে হলো। জসর,যশোহর, যশোর শব্দটি ইতিহাসের স্রোতের তোড়ে কেনো কিভাবে আজকের যশোর-এ স্থীর হলো সে কথাও আমাদের বেশি অজানা নয়। নতুন করে জানতে চাইলে খুব বেশি একটা বেগও পেতে হয় না। কিন্তু যে প্রশ্ন আজ এই যশোর নিয়ে উপস্থাপনার পিছনে তাগিদ সৃষ্টি করেছে তা হলো কেনো এখানে আজকের যশোর শহর সৃষ্টি হলো? যশোরের ইতিহাস আর এই জনপদের ইতিহাসের বয়স কি একই? যশোর নামকরণের পূর্বেই বা এই জনপদের নামকরণ কি ছিলো?

আদৌও কি এখানে কোনো জনপদ ছিলো? ইতিহাস কথা বলে। উত্তর দেবার জন্য ইতিহাস অপেক্ষা করে। কখনো কখনো ইতিহাস উগরে দেয় তার বক্ষ নিঃসৃত তথ্যাবলী। সুপ্রাচীন ইতিহাস গ্রন্থ থেকে জানা যায় যশোর নামের পুর্বে এই শহরের নাম ছিলো মুড়লি কসবা। মুড়লী প্রাচীন কাল হতেই বিখ্যাত শহর।

ভৈরব তখন বেগবান প্রবল নদ। বর্তমান শহরের কেন্দ্রবিন্দু থেকে পুর্ব দিকে দুই কিলোমিটার দূরে ভৈরব নদের দক্ষিণে অবস্থিত স্থানের নাম মুড়লী। সুপ্রাচীন গ্রন্থ ‘ঐতরেয় আরণ্যক’ ও ‘পানিনি’ হতে জানা যায় প্রাচীন বাংলা যখন রাঢ়,সুম্ম,পুন্ড্র,বংগ,বরেন্দ্র,সমতট,হরিকেল,গৌড়,তাম্রলিপ্ত রাষ্ট্রে বিভক্ত ছিলো; সে সময় গৌড়পুর, পুন্ড্র নগর,পুন্ড্র বর্ধন, তাম্রলিপ্ত,সোমপুর,বসুবিহার,বর্ধমান,পুষ্কর্ণ,ইদিলপুর, চন্দ্রদ্বীপ বা ইন্দ্রদ্বীপ,মুড়লী কসবা প্রভৃতি সুপ্রাচীন শহর বা নগর বলে পরিচিত ছিলো। মুড়লীতে ছিলো বৌদ্ধ সংঘারাম বা বৌদ্ধ মঠ। চৈনিক পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙের বিবরনীতে দেখা যায় যে, স্বয়ং বুদ্ধদেব এদেশে এসে স্বীয় মত প্রচার করেছিলেন। এতে করে দক্ষিণ বঙ্গে সুন্দরবন পর্যন্ত বৌদ্ধ ধর্ম বিস্তার লাভ করেছিল। বুদ্ধদেবের বাণী বঙ্গ দেশ হয়ে ব্রম্ম্র ও সিংহেলে গিয়েছিলো। সম্ভবত সুন্দরবন অঞ্চলে এই সময় বৌদ্ধদের বসতি অধিক পরিমাণে বিদ্যমান ছিলো।

দীঘি খননের সময় পীর খান জাহান আলী মৃত্তিকার নিচে যে বুদ্ধমূর্তি পেয়েছিলেন তা প্রমান করে দেয় যে এতদঞ্চলে বৌদ্ধ ধর্ম বিস্তৃত ছিলো। ভরত ভায়না ও আগ্রার স্তূপ বারবাজারে বৌদ্ধ ধর্ম ও সংস্কৃতির কেন্দ্রস্থল ছিলো বলে অনুমিত হয়েছে। যীশু খ্রিস্টের জন্মেরও প্রায় ছয়শ বছর পুর্বে সম্ভবত এ অঞ্চলে আর্য সভ্যতার পত্তন হয়। হিউয়েন সাঙ এই প্রদেশকে নীচ,আর্দ্র,সমুদ্র তীরবর্তী দেশ বলে বর্ননা করেছেন। এখানকার অধিবাসীরা ক্ষুদ্রকায় ও তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন এবং কৃষ্ণ বর্নের ছিলো। শৌর্যে-বির্যে, সাহসে সৃষ্টিশীলতায় এ জনপদের মানুষ ছিলো পারঙ্গম। গ্রিক পরিব্রাজক মেগাস্থিনিস উল্লেখ করেছেন যে, “দিগ্বিজয়ী আলেক জান্ডার এদেশের প্রতাপের কথা শুনে গঙ্গাতীর হতে অনত্র প্রস্থান করেন”। প্রাচীন ঐতিহাসিক দের ধারণা মুড়লি জনপদ সমতট রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত প্রধান শহর ছিলো। কানিংহাম গাঙ্গেয় বদ্বীপ,বাগড়ী এবং সমতটকে অভিন্ন রাজ্য বলে উল্লেখ করেছেন। প্রাচীন কালে বঙ্গদেশ বঙ্গ,রাঢ়, বাগড়ী,ও বরেন্দ্র এই চারভাগে বিভক্ত ছিলো। এর পুর্বে সমতট নাম দেখতে পাওয়া যায়। বরাহ মিহিরের ভৌগোলিক বৃত্তান্তে সমতটের উল্লেখ আছে। চৈনিক পরিব্রাজক সমতটকে চক্রাকৃতি এবং বেস্টন ৩০০০ লী বা ৫০০ মাইল বর্ননা করেছেন। রাজধানীর বেস্টন ২০ লী বা সাড়ে তিন মাইল। কানিংহাম সমতটের রাজধানী ” মুড়লী বা বর্তমান যশোর বলে উল্লেখ করেছেন। তারমতে, ” প্রাচীন এমন কোনো ম্যাপ বা ভৌগোলিক বৃত্তান্ত পাওয়া যায় না যেখানে মুড়লী শহরের নাম উল্লেখ নেই।” অবশ্য অধ্যাপক সতীশ চন্দ্র মিত্র সমতটের রাজধানী “মুড়লী শহরের বারো মাইল পশ্চিমে সাফাই নগর বা চম্পায় নগর বা আজকের বারো বাজার( বর্তমানে ঝিনেদাহ জেলার অন্তর্গত) ছিলো বলে স্থির করেন।

যুগের পরিবর্তন এবং ঐতিহাসিক অনুসন্ধানের ফলে পূর্ব বর্নিত সমতটের স্থান পরিবর্তিত হয়েছে। বাগড়ী বা গাঙ্গেয় এবং সমতট পৃথক পৃথক রাজ্য। সমতট বলতে বর্তমান ঐতিহাসিকদের মতে কুমিল্লা নোয়াখালী- কুমিল্লা, ফরিদপুর সিলেট প্রভৃতি স্থানের উল্লেখ আছে।ঐতিহাসিক নীহার রঞ্জন রায় তদীয় ‘ বাঙালীর ইতিহাস’ গ্রন্থে বলেছেন ‘ঐতরেয় আরন্যক’ গ্রন্থে বোধ হয় সর্ব প্রথম বঙ্গের নাম দেখা যায়।
বৃহৎ সংহিতা’য় উপবঙ্গ নামে একটি জনপদের উল্লেখ আছে।

আনুমানিক ষোড়শ – সপ্তদশ শতকে রচিত ” দিগ্বিজয় প্রকাশ” নামক গ্রন্থে উপবঙ্গ বলতে মুড়লী বা যশোর ও তৎসংলগ্ন কয়েকটি কাননময় অঞ্চলের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। বরাহ মিহিরের ‘বৃহৎ সংহিতা’য় যশোর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চল কে উপবঙ্গ বলা হয়েছে। মুড়লীতে বৌদ্ধ সংঘারামের বা বৌদ্ধ মঠের পতন ঘটিয়ে হিন্দু শাসকেরা অবস্থান গড়েছিলেন। বৌদ্ধ সংঘারামের কোনো নিদর্শন আজ আর চক্ষুগোচর না হলেও হিন্দু শাসক দের নির্মিত ধর্মীয় উপসানালয় শিব মন্দ্রির ও কালি বাড়ির অস্তিত্ব এখনো পাওয়া যায়। মুড়লীতে মধ্যযুগে সৈন্য বাহিনীর জন্য মাটির নিচে কেল্লা ছিলো। এ নিদর্শন এখন আর চোখে পড়ে না। যদিও মন্দির দুটির ধ্বংসাবশেষ আজও কালের স্বাক্ষী হয়ে আছে। পাঠান, মোগল,ইংরেজ আমলে মুড়লীর প্রধান্যের অনেক ইতিহাস আছে। বিস্তৃত ভৈরবের কুলে এই সুন্দর স্থানে হিন্দু বৌদ্ধ ও আদিবাসী জনতার বাস ছিলো।

প্রাচীন কালে এখানে এক সন্ন্যাসীর প্রতিষ্ঠিত কালীবাড়ি ছিলো। এভাবে প্রসিদ্ধ স্থান দেখলে পাঠানেরা শহর বসাতেন। এখানেও তাদের একটি শহর ছিলো। এই শহরের নাম মুড়লী কসবা। বৌদ্ধ, হিন্দু ও আদিবাসীদের বাস এমন মনোরম জনপদের সন্ধান পেয়ে সেখানে মুসলমান ফকিরগন স্থায়ী আস্তানা গাড়ার স্বপ্ন দেখেন।আনুমানিক ১৪৫০ সালের দিকে মুসলিম ধর্ম প্রচার ও রাজ্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে পীর খান জাহান আলী সহ বারো জন আওলিয়াগন ভৈরব কুলের মুড়লীতে একটি ধর্ম প্রচারের প্রধান কেন্দ্র সংস্থাপন করেন। ক্রমে এ স্থানে একটি নতুন শহর হলো। এই শহরই মুড়লী কসবা।এভাবে শহর প্রতিষ্ঠা করে খান জাহান আলী অগ্রসর হতে থাকেন। মুড়লীতে ধর্ম প্রচার কাজে গরীব শাহ ও বোরহান শাহ কে রেখে গেলেন। এখান থেকেই খান জাহানের প্রচার বাহিনি দুই ভাগে বিভক্ত হয়। একদল সোজা দক্ষিণ মুখে কপোতাক্ষের পূর্ব ধার দিয়ে ক্রমে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। অন্যদল পূর্ব দক্ষিণ মুখে ক্রমে ভৈরবের কুল দিয়ে বাগের হাট অঞ্চলে পৌঁছে। সঙ্গে সঙ্গে এই উভয় পথেই দুটি রাস্তা প্রস্তুত হয়ে যায়। ভৈরবের তীরে পুরাতন কসবায় গরীব শাহ এর মাজার এবং কারবালায় বোরহান শাহ এর সমাধী সেই সময়ের স্বাক্ষর বহন করে।

এরপর গঙ্গা, ভাগীরথী, ইছামতী,মধুমতী,কপোতাক্ষ আর ভৈরবে বয়ে গেছে বহু জল। সময়ের বিবর্তনের সাথে সাথে উত্থান-পতনের ঝড়-ঝঞ্ঝার মধ্যেও মুড়লী কসবা তার ঐতিহ্য সু-উচ্চে ধারণ করেই রাখলো। জমির উর্বরতা,প্রাকৃতিক নির্মলতা শহর জনপদের প্রাচীনত্ব বারবার আকৃষ্ট করেছে যেমন গন মানুষকে সেই সাথে বেনিয়া শাসকদেরও।

সতীশ চন্দ্র মিত্র যশোর খুলনার ইতিহাসে জানিয়েছেন নবরুপী দেবতা হাজী মোহাম্মদ মহসীন ও তার বোন মুন্নুজান বেগমের কাচারী বাড়ি ছিলো এই মুড়লীতে। এখানে একটি সুন্দর ঈমামবাড়াও তারা নির্মাণ করেছিলেন। যার ধ্বংসাবশেষ এখনো চোখে পড়ে। এখান থেকে ৫০ হাজার টাকা সে সময় তাদের বার্ষিক আয় হতো। ১৮১২ খৃষ্টাব্দে ৮২ বছর বয়সে মহসীন পরলোক গমন করলে ইংরেজ গভর্মেন্টের রাজস্ব বিভাগের আদেশ মতো সম্পত্তির রক্ষনাবেক্ষনের ভার যশোরের কালেক্টরের ওপর অর্পিত হলো। হুগলির কালেক্টর সহকারী রুপে থাকলেন। পূর্ব বৎ মুড়লীতেই সদর কাচারী থাকলো। মুন্নুজানের সময় হতেই সৈয়দপুর জমিদারির কাচারীও এই স্থানে ছিলো। কোনো কারনে কাচারীগৃহ দগ্ধ হবার পর অফিস যশোর কালেক্টরিতে স্থানান্তরিত হয়। ১৮৮২ অব্দে খুলনা পৃথক জেলা রূপে পরিনত হলে সৈয়দপুর স্টেটের সদর অফিস খুলনায় উঠে যায়। এবং খুলনার কালেক্টরই এজেন্ট হন। ধারণা করা যায়, মুড়লী কসবার ঐতিহ্যের কারণেই নিকটবর্তী চাচড়ার রাজবাড়ি গড়ে ওঠে। নবাব শায়েস্তা খাঁর আমলে যশোরের ফৌজদারের পদ উঠে গেলেও মুড়লীতে যশোরের একটি ফৌজদারী কাচারী থেকে যায়।

মনোহর রায় তখন যশোরের প্রকৃত রাজা ছিলেন।মুড়লীতে রাজা প্রতাপাদিত্যের সৈন্য বাস ছিলো। চাঁচড়া রাজ বংশের পূর্ব পুরুষ ভবেশ্বর রায়ের কিল্লাদার বা দূর্গাধ্যক্ষ ছিলেন বলে প্রবাদ আছে।

১৭৫৭ সালে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের পর ইংরেজরা রাজ্যধিকার করে যখন দেওয়ানী বিভাগ মুর্শিদাবাদ হতে কলকাতায় আনলো, তখন যশোর রাজ্যেরও একজন রাজস্ব সংগ্রাহক বা কালেক্টরকে এই মুড়লীতে পাঠিয়ে দিলেন(১৭৭২)।

কিন্তু দু বছর পরে এ ব্যবস্থা উঠে গেলেও ১৭৮১ অব্দে ইংরেজরা ঐ স্থানে একটি আদালত বা কাচারী খুললেন এবং যশোর, ফরিদপুর ও খুলনার অধিকাংশ স্থান এর শাসনাধীন করা হলো।

গভর্ণর জেনারেল তখন টিলম্যান হেঙ্কেল।(Tilman Henkell) নামক সুযোগ্য সদাশয় ব্যক্তিকে মুড়লীতে জজ ও ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত করে পাঠিয়েছিলেন। তার সহকারী(Register) হয়ে আসলেন রিচার্ড রোক(Richard Rocke) উভয়ের জন্য উচ্চ বেতন ও বাসস্থানের ব্যবস্থা হলো। মুড়লীতে একটি পুরাতন কুঠিও ছিলো। তা মেরামত করে হেঙ্কেল নিজের মন মতো করে নিলেন। এ সময় চুরি ডাকাতি অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ায় তা রোধের জন্য হেঙ্কেল দুজন দারোগার সাথে দেশি বরকন্দাজ- এর পরিবর্তে মুড়লীতে ৫০জন বিদেশী সিপাহী রাখার প্রস্তাব করেন এবং তা মুঞ্জুর হয়। কিন্তু চুরি ডাকাতি ঠেকানো গেল না। বরং ডাকাতির উৎপাত বেড়েই গেলো। এই আমলের একজন নামজাদা ডাকাত(!) ছিলো হীরা সর্দার। এদিকে ইংরেজদের সাথে বিরোধের কারণে জমিদাররা ডাকাতদের সাথে রাখলেন। একবার ইংরেজরা হীরা কে গ্রেফতার করে খুলনা জেলে আটক রাখলে জেল হতে তাকে খালাস করার জন্য ৩০০ লোক জমা হয়েছিল।

এ সময় হেঙ্কেল মুড়লীতে ৫০ জন সিপাহী এর মাধ্যমে আত্মরক্ষা করলেন। ইংরেজরা হীরাকে ডাকাত সর্দার হিসাবে আখ্যায়িত করলেও স্থানীয় জমিদারদের সাথে সম্পর্ক এবং জেল গেটে ৩০০লোকের উপস্থিতি প্রমাণ করে হীরা ছিলো ইংরেজ শাসক ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কন্ঠ।

মুড়লী জনপদের মানুষের ক্রমান্বয়ে সংগ্রামী সংগঠিত হওয়া এবং বিভিন্ন সময়ে ইংরেজদের এক চেটিয়া শোষণ কাজে বাধার সৃষ্টি করে ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হতে বাধ্য করা দেখে প্রভাবিত হন হেঙ্কেল। পরিস্থিতি এমন হয়েছিল যে,পরবর্তী সময়ে এ দেশীয় প্রজাদের জন্য স্বদেশীয় লোকের সঙ্গে বিরোধ করতে তিনি কুণ্ঠিত বোধ করতেন না। এজন্য তার নাম চির স্মরণীয় হয়ে আছে। হেঙ্কেলের সময় মুড়লীতে যশোর জেলার সদর স্টেশন ছিলো। ১৭৮৯ অব্দে তিনি বদলি হবার পর যখন রিচার্ড রোক (Richard Rocke) কালেক্টর হন। তখন তিনি কি কারণে ঠিক জানা যায় না মুড়লী ত্যাগ করে পার্শ্ববর্তী ভৈরবের তীরে সাহেব গঞ্জে ( ধারণা মতে বর্তমান নীলগঞ্জ) অফিস স্থানান্তর করেন। এ সময় চাঁচড়ার রাজ্যগন এ জন্য গভর্মেন্টকে ৫০০ বিঘা ভূমি দান করেছিলেন।

এই সাহেব গঞ্জে অফিস আদালত আসলে কর্তৃপক্ষ এর নাম রাখলেন–যশোহর। বাস্তবিক যশোহর শহর কে মুড়লীরই অংশ বলা যেতে পারে।

দেশে এই সুপ্রাচীণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের অনুসন্ধান অর্থহীন নয়। আমরা খুঁজতে পারি আমাদের ঐতিহ্যের– আমাদের লোক সাধারনের হারানো কৃষ্টি কালচার। লেখাটি সে প্রেরণার সামান্যতম উৎস পারলে – এই লোকালয়ের মানুষের মনে তাদের শেকড় সন্ধানে বিন্দু পরিমাণ উৎসাহ জোগালে মুড়লী নামের এই শহর অনুসন্ধান সার্থক হবে মনে করি। তার জন্য দরকার খনন-নতুন ইতিহাসের উত্থানের প্রচেষ্টা — আমরা নিশ্চয় সেই পথে ধাবিত হবো।