নাসরিন পারভীন ঋক্তা’র তিন টা কবিতা

নাসরিন পারভীন ঋক্তা'র তিন টা কবিতা

””””নারী””””
নাসরিন পারভীন ঋক্তা

আমি ভরা বর্ষার শান্ত শীতল রিমঝিম জলধারা,
আমি ফাল্গুনী কৃষ্ণচুড়ার আগুন ছড়ানো জ্বালা।

আমি সহ্যের অটল দাড়ানো সুউচ্চ হিমালয়,
আমি ঝড়, কাল বৈশাখীর দিক হীন প্রলয়।

আমি ধারণকারী, সৃষ্টির মহাসূচনা,,
আমি বিনাশ, অপয়া কর্মের বিরুদ্ধ প্রেরণা।

আমি ছায়া, তীব্র তপ্ত প্রবাহের দূর্ভেদ্য প্রতিরোধ,
আমি হরণকারী, অশুভ শক্তির প্রবল প্রকোপ।

আমি নিঃস্বার্থ বিলিয়ে দেয়া, মায়ার অতল ভান্ডার,
আমি এক নিমেষে সব ফিরিয়ে নেয়া ভয়াল চন্ডাল।

আমি এক অঙ্গে, প্রয়োজনে হাজার রুপের বহুরূপী,
আমি বিকশিত নানা বর্ণে, নাম যে আমার নারী।।

 

“””””দহন”””””
নাসরিন পারভীন ঋক্তা

প্রতিনিয়ত ঘোর লাগা স্বপ্নে দুঃস্বপ্নে,
আমি থাকি জেগে রাত্রির দ্বিপ্রহরে,
কড়া নাড়ি মনের তৃষিত করিডোরে।

হিম শীতল চারিধার তবু তীব্র দহনে,
গলে যেতে চায় মন কারো অন্তঃপুরের অতলে!!

একরাশ জিজ্ঞাসা নিয়ে আমি হাঁটি নিজ ভুবনে,
পুড়ে পুড়ে একাকী নিরালায় থাকি অপেক্ষাতে।
অট্টহাসির কুহেলিকা শুনি কারো প্রচন্ড আহবানে,
পাড়ি দিতে চাই সেই অচলায়তন জগতে।

অদ্ভুত এক দিশাহীন চলা যেন কলুষিত হতে,
যদিবা জোটে একটু প্রাপ্তি, ক্ষমাহীন পাপের পথে ;
তাড়িয়ে নিয়ে যায় আমায় বিস্মৃত নিষিদ্ধ গন্তব্যে….

অন্তঃপুরের সব নির্যাস ধুয়ে যাক আজ জ্যােৎস্না স্নানে,
বাহিরে বইছে তুমুল বর্ষণ তবু জ্বলছি এ কেমন দাহে!!

 

“”””” বর্ণময়তা”””‘
নাসরিন পারভীন ঋক্তা

আমি শূন্য অথবা অসীম কোন পরিসীমার ধ্রুবক,
আমি বিবর্ণ এক সাদাকালো বিলুপ্ত কালের সূচক।
.
আমি জ্বলতে পারি হয়ে তপ্ত আগ্নেয়গিরির সম্পূরক,
আমি শীতল ছায়ার পুঞ্জিভূত স্বচ্ছ মেঘের সরোবর।
.
আমি হতে পারি নির্মমতার ফেনিল স্রোতের ফণা,
আমি দরদী এক চাঁদোয়া মায়ার নীলাম্বরী কণা।
.
আমি হাজার ভীড়ের সম্মেলনে অসাড় বিবশ প্রাণ,
আমি একাকিত্বে বিভোর মগ্ন রচি সূর্য রশ্মির গান।
.
আমি শৃঙ্খলিত দৃঢ় বন্ধন ভেঙে হয়ে উঠি মহাত্রাস,
আমি নিরবে বিরহীর ব্যথায় সঞ্চার করি সুখ-আশ।
.
আমি বেদনার রোষে জর্জরিত ঘন কুয়াশা ধূসরতা,
আমি সোনালী রোদের পরশ বুলানো মিহি প্রখরতা।