জালালুদ্দিন রুমির ‍দুইটি কবিতা: অনুবাদে ফাতিন আরেফিন

গল্প এবং জল

একটা গল্প হলো পানির মতো, যা তুমি
উত্তপ্ত করো গোসলের জন্য।

এটা ধারণ করে তোমার ত্বক ও আগুণের মধ্যবর্তী সংবাদ,
সাক্ষাত ঘটায় উভয়ের এবং পরিষ্কার করে দেহকে।

কেবল অল্প সংখ্যকই পারে বিশ্রাম নিতে আগুণে—
ইব্রাহিম কিংবা স্যালমান্ডারের মতো
যেক্ষেত্রে আমাদের প্রয়োজন কোন মধ্যস্ততাকারীর।

স¤পূর্নতার অনুভ’তি আসে—
কিন্তু তা সচরাচর আনতে প্রয়োজন অর্থের…

যদিও বা সৌন্দর্য আমাদের ঘিরে আছে
কিন্তু তা জানতে আমদের যেতে হয় বাগানে

দেহ নিজেই একটা আবরক
এবং তা তোমার অস্তিত্বের ভেতরে প্রজ্বলিত আলোর
সামান্যই প্রকাশ করে বাইরে।

পানি, গল্প, দেহ, আমাদের করা সমস্তকিছু
এক একটি ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যম
যা অজ্ঞাতকে গোপন করে আবার করে প্রকাশ।

অধ্যয়ন করো এসব
এবং উপভোগ করো একে যা একটি রহস্য নিয়ে মুছে যায়
কখনো আমরা তা জানি, অতপর, একটু পরেই তা জানি না।

 

 

অতিথিশালা

এই মানবসত্তা একটা অতিথি ঘর—
প্রতি সকালেই একজন নতুন মেহমান।

একজন সুখ, একজন হতাশা, একজন ক্ষুদ্রতা,
অপ্রত্যাশিত অতিথি হয়ে আসেন—
ক্ষণস্থায়ী কজন সচেতনতা…

স্বাগত জানাও এবং আপ্যায়িত করো তাদের সবাইকে
—তা যদি এক দঙ্গল দুকখোও হয়,
যা ঠেলে সরায় গৃহের সকল আসবাব সহিংসভাবে,
এরপরও, আন্তরিকচিত্তে গ্রহণ করো সবাইকে—
হয়তো সে তোমাকে পরিষ্কৃত করছে জেনো,
নতুন কিছু আনন্দআগমন উপলক্ষে।

অন্ধকার আশংকা, অপমান, আক্রোশ, ঘৃণা— সবকিছু,
হাসিমুখে এগিয়ে নাও দরোজায়
এবং আমন্ত্রণ জানাও গৃহের ভেতরে।

যেই আসুক না ক্যানো— কৃতজ্ঞ হও,
কারণ এক উপদেষ্টা হিসেবে ঘরে
প্রত্যেককেই পাঠানো হয়েছে অর্ন্তলোক থেকে।