কায়কোবাদ

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের পথিকৃৎদের একজন এবং কাব্যের আদর্শ ও প্রেরণার মধ্যেই যাকে আমরা খুজে পাই। তিনি হলেন মহাকবি কায়কোবাদ। কায়কোবাদ ১৮৫৭ সালে (বর্তমানে বাংলাদেশের) ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ থানার অধীনে আগলা-পূর্বপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ঢাকা জেলা জজ কোর্টের একজন আইনজীবী শাহামাতুল্লাহ আল কোরেশীর পুত্র। ১৯৫১ সালে এই মহাকবি পরপারে পাড়ি জমান।

মহাকবি কায়কোবাদ রচিত জাতীয় আখ্যান কাব্যগুলোর মধ্যে সুপরিচিত ‘মহাশ্মশান’ কাব্যটি অন্যতম। কায়কোবাদের মহাকবি নামের খ্যাতি এই মহাশ্মশান কাব্যের জন্যই। কাব্যটি তিন খণ্ডে বিভক্ত। প্রথম খণ্ডে ঊনত্রিশ সর্গ,দ্বিতীয় খণ্ডে চব্বিশ সর্গ এবং তৃতীয় খণ্ডে সাত সর্গ। মোট ষাট সর্গে প্রায় নয়শ’ পৃষ্ঠার এই কাব্য বাংলা ১৩৩১, ইংরেজি ১৯০৪ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়; যদিও গ্রন্থাকারে প্রকাশ হতে আরো কয়েকবছর দেরি হয়েছিল। পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধযজ্ঞকে রূপায়িত করতে গিয়ে কবি বিশাল কাহিনী,ভয়াবহ সংঘর্ষ, গগনস্পর্শী দম্ভ,এবং মর্মভেদী বেদনাকে নানাভাবে চিত্রিত করেছেন। বিশালতার যে মহিমা রয়েছে তাকেই রূপ দিতে চেয়েছিলেন এই কাব্যে।

‘ঈদ আবাহন’ এই শিরোনামে নামে মহাকবি কায়কোবাদ দুইটি কবিতা লিখেছিলেন। একটি তাঁর অশ্রুমালা এবং অন্যটি অমিয়ধারা কাব্যগ্রন্থভূক্ত। উভয় কবিতায় কবি মুসলিম উম্মাহর ভ্রাতৃত্ববোধ এবং নবজাগরণ কামনা করেছেন। সম্ভাবনাময় মুসলিম ঐক্যের আশাবাদ ব্যক্ত করে কবি বলেন-

‘আজি এই ঈদের দিনে হয়ে সব এক মনঃপ্রাণ,
জাগায়ে মোম্লেম সবে গাহ আজি মিলনের গান।
ডুবিবে না তবে আর ঈদের এ জ্যোতিষ্মান রবি,
জীবন সার্থক হবে, ধন্য হইবে এ ধরিদ্র কবি।’