শাহাদাৎ হোসেন

কবি শাহাদাৎ হোসেন ১৮৯৩ সালে কোলকাতায় জন্ম গ্রহণ করেন। এই খ্যাতিমান কবি, সাহিত্যিক ও নাট্যকাররের ভিতর মুসলিম ঐতিহ্য সচেতনতা ও নিসর্গপ্রীতি লক্ষ করা যায়। ১৯৫৩ সালে মাত্র ৬০ বছর বয়সে পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলায় এই বিখ্যাত কবি পরলোক গমন করেন।
কবি শাহাদাৎ হোসেন এর ঈদ ভাবনা নিম্নে তুলে ধরা হলো।

কবি শাহাদাত হোসেন তার ‘শাওয়ালের চাঁদ’ কবিতায় লিখছেন—
‘তোমার আগমে আজি বরিহ্নহ্ন অশান্তির
নিভে যাক, হাহাকার মহা-মহামার
বিশ্ব নিখিলের; ডুবে যাক প্রশান্তির
গভীর অতলে; রূপ-রস গন্ধভারে
দগ্ধসৃষ্টি হোক পুন ঋতুপর্ণা রূপা।’

কবি শাহাদাৎ হোসেনের কবিতার বিষয়ে ও প্রকাশে তাঁর স্বভাবশোভন ধ্রুপদী বিন্যাস। যেমন ‘ঈদুল ফিতর’ কবিতায় কবি লিখেছেন :
কোথা মক্কা-মোয়াজ্জেমা মদিনা কোথায়
প্রাণকেন্দ্র এ মহাসাম্যের
কোথা আমি ভারতের প্রান্ততটে ক্ষুদ্র ঈদগাহে।
সিন্দু-মরু-গিরি-দরী-কান্তার-তটিনী
রচিয়াছে ব্যবধান দুর্জয় বিপুল
তবু শুনি বায়ুস্তরে তরঙ্গদোলায়
ভেসে আসে সে উদাত্ত মন্দ্রিত নির্ঘোষ।
সাম্যের দিশারী আমি-আমি মুসলমান
দেশ-কাল-পাত্র মোর সর্ব একাকার-
বহুত্বে একক আমি
আত্মার আত্মীয় মোর দুনিয়া-জাহান।

ঈদুল আজহা সম্পর্কিত কবি শাহাদাৎ হোসেন এর কবিতা ‘ঈদ-বোধন’ এই কবিতার উপাত্ত পঙক্তিগুলি এরকম :
ত্যাগপন্থী ‘ইসমাইল’ সবুজ তরুণ
নব জীবনের আশে রঙিন অরুণ
যুগে যুগে এ আহ্বানে জেগেছিস তোরা
আজিও জাগরে যুগে খুলে দে রে শোণিতের উন্মাদিনী ঝোরা।
তাজা খুনে লাল হয়ে যাক ‘মীনা’র ময়দান,
মরণের আলিঙ্গনে হোক পুনর্জীবনের নব অভ্যুত্থান।